News update
  • IAEA Chief Calls for Renewed Commitment to Non-Proliferation     |     
  • UN Aid Chief Warns Humanitarian Work Faces Collapse     |     
  • Arab-Islamic Summit yields limited action over Israeli strike on Doha     |     
  • National Consensus Commission term extended till October 15     |     
  • EU Helping BD prepare for free, fair elections: Envoy Miller     |     

‌‘আমার সোনার বাংলা’ যেভাবে জাতীয় সংগীত হলো

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2024-09-04, 6:01pm

tyryert-ca6fa9a640f03095a6e30643214840d61725451386.jpg




‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছিল। গানটির মূল পাণ্ডুলিপি পাওয়া না যাওয়ায় এর সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। সত্যেন রায়ের লেখা থেকে জানা যায়, ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতা টাউন হলে একটি প্রতিবাদসভায় এই গান প্রথম গাওয়া হয়। সেই বছর ৭ সেপ্টেম্বর (২২ ভাদ্র, ১৩১২ বঙ্গাব্দ) ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বাক্ষরে গানটি ছাপা হয়।

জাতীয় তথ্য বাতায়নে বলা হয়েছে, ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে স্বদেশী আন্দোলনের সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী রাজনীতিক, স্বদেশী কর্মী ও বিপ্লবীরা বাঙালি জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যম হিসেবে এই গান প্রচার করেন। কিন্তু বিশ শতকের বিশের দশকে আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদ স্তিমিত হয়ে পড়লে এই গানের প্রচলন কমে যায়।

১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চিরসবুজ সিনেমা ‘জীবন থেকে নেওয়া’-তে এই গান ব্যবহৃত হয়। এটি কোনো সিনেমায় এই গানের প্রথম ব্যবহার। জহির রায়হান নির্মিত এই সিনেমায় তৎকালীন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকে রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে গানটির পুনরুজ্জীবন ঘটে। ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ আয়োজিত এক জনসভায় গানটি গাওয়া হয়।

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের আগেও গানটি গাওয়া হয়েছিল। ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা প্যারেডেও গানটি গাওয়া হয়।

মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। মুক্তিযুদ্ধের সময় গানটির বর্তমানে প্রচলিত যন্ত্রসুর করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার অজিত রায়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন হলে এর ৪.১ অনুচ্ছেদে ‘আমার সোনার বাংলা’র প্রথম ১০ চরণ (মোট চরণ ২৫ চরণ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

গানের প্রথম ১০ ছত্র কণ্ঠসংগীত এবং প্রথম ৪ ছত্র যন্ত্রসংগীত ও সামরিক বাহিনীতে ব্যবহার করা হয়।

জাতীয় সংগীত পরিবর্তন চেয়ে যা বলেছেন আমান আযমী

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতকে ‘স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি’ আখ্যা দিয়ে তা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। এসময় তিনি আট বছর ‘গুম থাকার’ সময়ের বর্ণনা দেয়ার পাশাপাশি নতুন করে সংবিধান রচনার দাবি জানান।

আমান আযমী বলেন, “১৯০৫-এ বঙ্গভঙ্গ-রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এই জাতীয় সংগীত দুই বাংলা এক করার জন্য জাতীয় সংগীত। আমরা কি দুই বাংলা এক হতে চাচ্ছি? আমরা কি স্বাধীন বাংলাদেশ রাখতে চাই, নাকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অঙ্গীভূত রাজ্য হতে চাই?’’

আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি, স্বাধীন বাংলাদেশ থাকতে চাই। এই জাতীয় সংগীত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের পরিপন্থি। আমি জোর দাবি জানাচ্ছি, আমাদের নতুন জাতীয় সংগীত তৈরি করা হোক।

বাহাত্তরের সংবিধানকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে আমান আজমি বলেন, “১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে ম্যান্ডেট নিয়েছিল পাকিস্তানের সংবিধানের অধীনেই পাকিস্তান রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য, স্বাধীন সংবিধান রচনা করে নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি-আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু তারা জনগণের কাছ থেকে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কোনো ম্যান্ডেট নেয়নি। সুতরাং এই সংবিধান আমার দৃষ্টিতে বৈধ নয়। নতুন করে একটা কমিটি করে নতুন সংবিধান তৈরি করা হোক, এটা বাতিল করা হোক।”

সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার থাকা অবস্থায় ২০০৯ সালে বরখাস্ত হন আমান আযমী। ২০১৫ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তথ্যকে ‘কাল্পনিক’ বলেছিলেন। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে আবারও একই প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “শেখ মুজিব সাহেব ৩ লাখ বলতে গিয়ে ৩ মিলিয়ন বলেছেন এবং এটাই ৩০ লাখ হয়ে গেছে। কোনো জরিপ ছাড়া ৩০ লাখ শহীদ বলে বলে তারা মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’’

সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনারা জরিপ করে বের করেন, অ্যাকচুয়ালি ৩০ লাখ হোক আর ৩ কোটি হোক। আমার জানামতে, এটা ২ লাখ ৮৬ হাজার। তারা ৩ লাখকে ৩০ লাখ বানিয়ে ফেলেছে। এখনো সময় আছে, জাতিকে সত্য ইতিহাস জানতে দিন।

সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে আমান আযমীর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।