রাজধানীর মিরপুর ৯ নম্বরে সরকারি জমিতে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ১,৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাটের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
ফ্ল্যাটের নকশায় দেখা গেছে, প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। এতে দুটি শয়নকক্ষ (বেডরুম), একটি ড্রয়িংরুম (বসার ঘর), একটি লিভিং রুম (বিশ্রাম ঘর), একটি খাবার কক্ষ, রান্নাঘর ও তিনটি শৌচাগার বা টয়লেট থাকবে।
এ ছাড়া, একটি কক্ষ থাকবে শুধু আহত ব্যক্তির জন্য, যিনি পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ওই কক্ষে তাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, বিশেষ করে যারা তাদের কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাসেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য আলাদা দুটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাবে। এ দুটি প্রকল্পই ২০২৯ সালে শেষ হবে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে ক শ্রেণিতে ‘অতি গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয়েছে ৪৯৩ জনকে। খ শ্রেণিতে ‘গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয় ৯০৮ জনকে। সব মিলিয়ে গুরুতর আহতের তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ৪০১ জনের নাম। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ৮৩৪ জনকে শহীদ ঘোষণা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আহত ব্যক্তিদের অঙ্গহানির বিষয়টি মাথায় রেখে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ভবনে তাদের ওঠানামা এবং বাসায় বসবাসের উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে। মিরপুর হাউজিং এস্টেটে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে মোট ১৫টি ভবন করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির জানান, অবকাঠামো নির্মাণ তাদের অগ্রাধিকার। ভবন নির্মাণে প্রায় চার বছর সময় লাগবে। ফ্ল্যাট কারা পাবেন, তা জুলাই অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যৌথ সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত করা হবে। আহত ব্যক্তিদের আঘাতের ভয়াবহতা অনুসারে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।