News update
  • Gaza Begins Mass Cleanup to Restore Dignity and Normal Life     |     
  • BNP weighing review of some nominations amid grassroots unrest     |     
  • US presses for Gaza resolution as Russia offers rival proposal     |     
  • 35 crude bombs, bomb-making materials found in Geneva Camp     |     
  • 8 Islamic parties want referendum before polls, neutral admin     |     

পরিবেশই মানুষের জীবিকা, নীল আকাশই সুখ

ওয়াং হাইমান ঊর্মি মিডিয়া 2022-09-27, 11:16pm




একটি ভালো প্রাকৃতিক পরিবেশ হল সবচেয়ে ন্যায্য গণপণ্য এবং মানুষের সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক মঙ্গল। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং বলেছেন, অর্থনীতির বিকাশ জনগণের জীবিকার জন্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করাও জনগণের জীবিকার জন্য। চীনের নীল আকাশ, বাতাস ও পানির মান কেমন? সাধারণ মানুষের অনুভূতি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ব্যাপার। 


নীল আকাশ আর সাদা মেঘ, সতেজ বাতাস আর এ ধরনের আবহাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। তবে দশ বছর আগেও এমন ভালো আবহাওয়া অনেক জায়গায় ছিল না। চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের গবেষণালয়ের মাধ্যমে রিমোট সেন্সিং উপগ্রহ কর্তৃক রেকর্ডকৃত বাতাসের মানের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বেইজিং-থিয়ানচিন-হ্যপেই অঞ্চলে, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে, ভারী দূষণ ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং ২০১৩ সালে চীনে বায়ুদূষণের শীর্ষ অঞ্চলে পরিণত হয়। বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। 


প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিষয়টির ওপর অনেক গুরুত্ব দেন। ২০১৪ সালে তিনি বেইজিং পরিদর্শনের সময় বলেন, বায়ুদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বেইজিংয়ের গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বাধাগুলোর অন্যতম। এটি মোকাবিলায় গোটা সমাজের যৌথ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।


এরপর থেকে তিনি অনেক বার জোর দিয়ে বলেছেন, বায়ুদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপগুলো কাজে লাগাতে হবে, যা সাধারণ মানুষের কাছে নীল আকাশ এবং সাদা মেঘ পুনরায় ফিরিয়ে দেবে। নীল আকাশ রক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী ও নজিরবিহীন যুদ্ধ শুরু হয় তখন দেশব্যাপী।


২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ‘বায়ু ক্ষেত্রের ১০টি নিয়ম’ শীর্ষক ‘বায়ুদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। এতে বলা হয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত গোটা চীনে সূক্ষ্ম কণার ঘনত্ব কমাতে হবে। এর মধ্যে বেইজিং-থিয়ানচিন-হ্যপেই অঞ্চলে ২৫ শতাংশ কমাতে হবে। ২০১৮ সালে ‘নীল আকাশ রক্ষার যুদ্ধে জয়ী হওয়াসংক্রান্ত তিন বছরের কর্ম-পরিকল্পনা’ প্রকাশিত হয়।


এতে বলা হয়, ২০২০ সাল পর্যন্ত, প্রিফেকচার-স্তরের শহর ও এর উপরের শহরগুলোর বায়ুর গুণগত মান বছরের ৮০ শতাংশ দিনে নিশ্চিত করতে হবে। এই ব্যাপারে চীনের হ্যপেই প্রদেশের হানতান শহরের উদাহরণ দিয়ে বলি, হানতান একটি ভারী শিল্প শহর যার প্রধান ভিত্তি হল ইস্পাত ও লোহা। এখানে পুননির্মাণ ব্যবস্থা কাজে লাগানোর পর ১৮টি ইস্পাত ও লৌহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং ২১টি কোকিং এন্টারপ্রাইজ শিল্পপ্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠান এখন ন্যূনতম গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করে। ঐতিহ্যবাহী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অপ্টিমাইজ এবং আপগ্রেডেশানের পাশাপাশি, ৩০ হাজারেরও বেশি ‘বিক্ষিপ্ত ও দূষিত’ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ বা স্থানান্তরিত হয়েছে। এ কাজের সমন্বয় ছিল অভূতপূর্ব। 


২০২১ সালে, বাতাসের গুণগত মানের দিক দিয়ে, হানতান শহরের ভালো দিনের সংখ্যা ২০১৩ সালের ৭৪ দিন থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৫ দিনে। আর ভারী দূষণের দিনের সংখ্যা ৯৮ দিন থেকে কমে দাঁড়ায় ১৫ দিনে। হানতানের অভিজ্ঞতা গোটা চীনে নীল আকাশ প্রতিরক্ষাযুদ্ধের একটি উদাহরণমাত্র। প্রেসিডেন্ট সি মনে করেন, প্রাকৃতিক  সভ্যতা নির্মাণ চীনা জাতির টেকসই উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত বিষয়। গত দশ বছরে তিনি যেখানেই পরিদর্শনে গেছেন, স্থানীয় জনগণকে প্রাকৃতিক পরিবেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং সবুজ উন্নয়নের ধারণা কাজে লাগানোর উপদেশ দিয়েছেন। 


২০১৬ সাল থেকে ইয়াংজি নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষাকাজ জাতীয় কৌশলগত স্তরে উন্নীত হয়। ইয়াংজি নদীর তীরে অবস্থিত মোট ১ লাখ ১০ হাজারেও বেশি রাসায়নিক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরণের ‘বিক্ষিপ্ত ও দূষণকারী’ প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা স্থানান্তরিত হয়। ২০২১ সালে ‘সান চিয়াং ইউয়ান’ জাতীয় উদ্যান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট সি বারবার ‘সান চিয়াং ইউয়ান’ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ছিংহাইকে এই ‘সান চিয়াং ইউয়ান’ রক্ষা এবং ‘চায়না ওয়াটার টাওয়ার’ রক্ষার প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে। এখানে ‘পানি দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের পর দেশজুড়ে বিভিন্ন জলাশয়ের ওপর তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোয় জলাভূমি সুরক্ষার কাজও জোরদার করা হয়’। 

নীল আকাশ, স্বচ্ছ পানি, তাজা বাতাস। গত দশ বছর ধরে একটি সুন্দর চীনের ছবি ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে। 


( ওয়াং হাইমান ঊর্মি, সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং চীন।)