News update
  • Vegetable prices remain high, people buy in small quantities     |     
  • Off-season watermelon brings bumper crop to Narail farmers     |     
  • Climate Change Drives Deadly Floods, Storms, and Water Crises     |     
  • UN Advances Peace, Development Amid Global Challenges     |     
  • S Arabia, Pak ink defence pact after Israeli strike on Qatar     |     

তারেক রহমানের এনআইডির দাবিতে প্রচারিত ছবি নিয়ে যা জানা গেল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2025-09-19, 3:11pm

img_20250919_150658-02409c0f820d24a2a2978a30d132ee681758273077.jpg




‘আলহামদুলিল্লাহ বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ভোটার হলেন।’ ক্যাপশনে একটি ছবি সম্প্রতি ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। ছবিটি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্টকার্ডের, যেটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ও তথ্য রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তারেক রহমান এখনও বাংলাদেশের ভোটার হননি এবং স্মার্ট এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র) কার্ড পাননি৷ প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা বাংলাদেশের এনআইডি কার্ডের আদলে তারেক রহমানের তথ্যাবলী যুক্ত করে তৈরি একটি এনআইডি কার্ডের ছবি প্রচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত এনআইডি কার্ডের ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বেশকিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।

তারেক রহমানের নামের ইংরেজি বানান

প্রচারিত এনআইডি কার্ডে তারেক রহমানের নামের ইংরেজি বানান ‘Tareq Rahman’ লিখা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বিএনপির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তার নামের বানান ‘Tarique Rahman’ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, তারেক রহমানের ফেসবুক পেজ ও এক্স অ্যাকাউন্টেও নামের একই বানান (Tarique Rahman) ব্যবহার করা হয়েছে। 

পিতার নাম

প্রচারিত এনআইডি কার্ডে তারেক রহমানের পিতার নাম ‘শহীদ জিয়াউর রহমান’ উল্লেখ করা হয়েছে। তারেক রহমানের পিতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৷ ‘শহীদ’ শব্দটি একটি সম্মানসূচক উপাধি যা জিয়াউর রহমানের নামের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। তবে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের সঙ্গে কোনো উপাধি বা পদবি যুক্ত করা যাবে না বলে নিয়ম জারি রয়েছে। 

তারেক রহমানের জন্ম তারিখ ও সাল

প্রচারিত এনআইডি কার্ডে তারেক রহমানের জন্ম তারিখ ও সাল ‘১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪’ উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বিএনপির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, তারেক রহমানের জন্ম তারিখ ও সাল ২০ নভেম্বর ১৯৬৭।

তারেক রহমানের স্বাক্ষর

প্রচারিত এনআইডি কার্ডে তারেক রহমানের স্বাক্ষরের বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ‘Tarique deposited passport in high commission: Shahriar’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত তারেক রহমানের পাসপোর্টের ছবিতে তার স্বাক্ষর পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচিত এনআইডি কার্ডে দাবিকৃত স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই। 

তারেক রহমানের ছবি 

বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবির ক্ষেত্রে চশমা পরে ছবি তোলার বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হয়। এবং অবশ্যই সোজাসুজি বসে ক্যামেরার দিকে সরাসরি তাকিয়ে ছবি তুলতে হয়। আলোচিত এনআইডি কার্ডের ছবিটিতে তারেক রহমানকে কিছুটা ডানে তাকিয়ে থাকতে লক্ষ্য করা যায়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২) তারেক রহমানের বহুল ব্যবহৃত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটি ক্রপ ও ব্লার করে আলোচিত এনআইডি কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে৷ 

এনআইডি নাম্বার

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ০৪ অক্টোবর ‘Smart NID card breeds excitement’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত এনআইডি কার্ডের ছবিতে দেখা যায় ১০ সংখ্যার এনআইডি নাম্বারে ৩-৩-৪ অনুক্রমে দুইবার স্পেস ব্যবহার করা হয়। তবে, আলোচিত এনআইডি কার্ডে ১০ সংখ্যার এনআইডি নাম্বারে কোনো স্পেস ব্যবহার করা হয়নি। 

পরবর্তীতে, প্রচারিত পোস্টগুলোতে যুক্ত ছবি সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে এতে ‘Iqbal Tv’ সূচক একটি লোগো ও ‘বিজ্ঞাপন’ জলছাপ লক্ষ্য করা যায়। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে Iqbal Tv এর ফেসবুক পেজে গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত পোস্টে আলোচিত ছবির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

পেজটি পর্যবেক্ষণ করে এটির ডেসক্রিপশনে দেখা যায়, এটির কন্টেন্টগুলো বিনোদনের উদ্দেশ্যে প্রচার করা এবং তাদের কোনো পোস্টকে গুরুত্বসহকারে না নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ, একটি বিনোদননির্ভর পেজের পোস্টকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

গণমাধ্যম সূত্রে এ বিষয়ে সর্বশেষ জানা যায়, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও সে সময় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডনে থাকায় ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে পারেননি। তবে নির্বাচন কমিশনের সূত্রমতে, চলতি বছর ৬ মে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে জোবাইদা রহমান ভোটার হয়েছেন। কিন্তু তারেক রহমান এখনও ভোটার হননি। এছাড়া, তারেক রহমান লন্ডন থেকে নয় বরং দেশে ফিরে ভোটার হবেন বলে জানিয়েছেন। 

গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তারেক রহমান ভোটার হলে তা গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হওয়ার কথা। তবে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এ দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং তারেক রহমান ভোটার হয়েছেন দাবিটি মিথ্যা এবং এ দাবিতে প্রচারিত এনআইডি কার্ডটি বানোয়াট। আরটিভি।