লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু। ছড়িয়েছে দেশের ৫৮ জেলায়। আর বরিশালের বরগুনা হয়ে উঠেছে রেড জোন। দেশে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫ হাজার ৫৭০ জন। যার প্রায় ৫০ শতাংশই বরিশাল বিভাগে। তবে মৃত্যুর সংখ্যায় এগিয়ে ঢাকা।
একদিকে করোনা আতঙ্ক, অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ–দুদিক থেকেই যেন মৃত্যুর আশঙ্কায় দিন কাটছে দেশের মানুষের।
ডেঙ্গু এতদিন রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ হিসেবেই বিবেচিত হলেও এখন আর তা শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ নেই। দেশের ৫৮টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশা। এর মধ্যে বরগুনায় সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগেই ১২৪ জন আক্রান্ত, যার মধ্যে ৬৭ জন বরগুনার। মৃত্যুবরণ করা পাঁচজনের মধ্যে ৪ জন বরগুনার এবং ১ জন ঢাকার।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে হলেও মৃত্যুহার বেশি ঢাকায়।
দেশব্যাপী ডেঙ্গুর এমন ছড়িয়ে পড়াকে আশঙ্কা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, লাগাম টেনে ধরতে হবে এখনই, না হলে বরগুনা ছাড়া অন্য জেলায়ও মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে মশার বিস্তার ঠেকাতে পারলেই সম্ভব ডেঙ্গু রোধ করা। তাই শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপশি সবাইকে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এখনও কিন্তু সিজন শুরু হয়নি। সামনের দিনগুলোতে ডেঙ্গু আরও বাড়বে। আগামী এবং তার পরের মাসে আরও বাড়বে। হাসপাতালগুলোর প্রস্তুত থাকা দরকার যে বেশি ডেঙ্গু রোগী ম্যানেজমেন্টার করার জন্য তাদের যেন প্রস্তুতি থাকে। আমি আরও কয়েকটি জেলার কথা বলতে পারি, এই জেলাগুলোতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তারমধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যে বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী আছে, সেই বাড়ির চতুর্দিকে ২০০ মিটারের মধ্যে ফগিং করে করে নিশ্চিত করতে হবে যেন ওই বাড়ির আশপাশে কোনো মশা বেঁচে না থাকে।
শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপশি সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শও দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে হলেও, মৃত্যুহার বেশি ঢাকায়।