News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

হামাস ছয় জিম্মিকে ফেরত দিলেও মুক্তি পেলো না ফিলিস্তিনি বন্দিরা

বিবিসি বাংলা সংঘাত 2025-02-23, 1:43pm

4tewrewrw-70f02dffef79e629ab340239f2720cc11740297169.jpg




ইসরায়েল বলেছে, তারা ছয়শোর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করছে। এটিকে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ায় আরেকটি বড় ধরনের সম্ভাব্য সংকট বলে মনে করা হচ্ছে।

শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে চারজনকে ২০২৩ সালের সাতই অক্টোবরে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলার সময় অপহরণ করা হয়েছিলো।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস পরবর্তী জিম্মি মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত হবে। এবং তিনি বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে জিম্মিদের মুক্তির সময় যে 'অসম্মানজনক অনুষ্ঠান' হামাস করে থাকে, সেটি ছাড়াই জিম্মি মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে।

চলমান যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে আর এক দফা জিম্মি মুক্তি পাবার কথা রয়েছে। এই দফায় চার জনকে ফেরত দেয়ার কথা যারা জিম্মি অবস্থায় মারা গেছেন।

জীবিত বাকী জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদের মুক্তি পাওয়ার কথা।

মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সঠিক পথে রাখতে এবং সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে কাজ করবেন।

নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে 'অপপ্রচার চালানোর জন্য জিম্মিদের অসম্মানজনক ব্যবহার'সহ চুক্তির 'বারবার লঙ্ঘন' এর অভিযোগ করেছেন।

শনিবার চার জিম্মির মুক্তির পর তিনি বিবৃতি দিয়েছেন। যারা মুক্তি পেলেন তাদের মধ্যে চারজনকে নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে জিম্মি করে নিয়েছিলো হামাস। এরা হলেন- টাল শোহাম, ওমের শেম টোভ, এলিয়া কোহেন এবং ওমের ওয়েনকার্ট।

মুক্তি পাওয়া বাকী দুই জিম্মি আভেরা মেঙ্গিসটু এবং হিশাম আল-সায়েদকে কয়েক বছর ধরে গাজায় আটকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে মি. মেঙ্গিসটু ২০১৪ সাল থেকে এবং মি. আল-সায়েদ ২০১৫ সাল থেকে জিম্মি অবস্থায় আছেন।

ছয় জিম্মিই ছিলেন শেষ জীবিত জিম্মি যারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মুক্তি পেলেন।

ওদিকে দখলীকৃত পশ্চিম তীরের ওফের কারাগারের বাইরে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের পরিবার ও স্বজনেরা।

খান ইউনিসের ৮০-বছর বয়সী একজন মা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, তার ছেলে ৩৩ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন এটা তার বিশ্বাসই হচ্ছে না।

ওদিকে হামাসও বন্দি মুক্তিতে বিলম্বের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। তবে নেতানিয়াহুর বিবৃতির তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া দেয়নি হামাস।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেসব বন্দির মুক্তি পাওয়ার কথা তাদের মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন এবং ৬০ জন দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। এছাড়া আরও ৪৪৫ জনকে সাতই অক্টোবর ইসরায়েল আটক করেছিলো।

অন্যদিকে ২০২৩ সালের সাতই অক্টোবর হামাস যাদের জিম্মি করেছিলো তাদের মধ্যে ৬২ জন এখনো জিম্মি অবস্থায় আছে। এর মধ্যে অর্ধেক জীবিত আছে বলে ধারণা করা হয়।

তিন পর্বের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও জিম্মির মুক্তি পাওয়ার কথা, যা পহেলা মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা।

উনিশে জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর রেড ক্রসের মাধ্যমে হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেয়া শুরু করেছিলো ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে।

হস্তান্তরের আগে একটি সুসজ্জিত মঞ্চে হামাস যোদ্ধাদের জিম্মিদের নিয়ে আসতে দেখা যায়।

শনিবার মুক্তি পাওয়া দুই জিম্মিকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে নিয়ে আসার পর ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরা হলেন মি. শোহাম ও মি. মেঙ্গিসটু।

মি. শোহাম ২০২৩ সালের অক্টোবরে কিবুৎয বে'রিতে পরিবারের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ হামাস কর্তৃক অপহৃত হন। তিনি ছাড়া তার পরিবারের বাকীরা ৫০ দিন আগেই মুক্তি পেয়েছেন।

অন্যদিকে মি. মেঙ্গিসটু মূলত ইথিওপিয়ান ইসরায়েলি। তিনি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হামাসের হাতে আটক ছিলেন।

তিনি এবং মি. আল-সায়েদ, যিনি একজন বেদুইন আরব ইসরায়েলি- দুজনই অতীতে মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন বলে তাদের পরিবার জানিয়েছেন।

মি. আল-সায়েদ শনিবার গাজায় আলাদাভাবে মুক্তি পেয়েছেন।

"প্রায় এক দশকের লড়াই শেষে বহুল প্রতীক্ষিত সময়টি এসেছে," তার পরিবার বলেছে এক বিবৃতিতে।

ওদিকে মধ্য গাজার নুসেইরাতে মি. শেম টভ, মি. কোহেন ও মি. ওয়েনকার্ট আরেকটি জনসমাগমের মাধ্যমে হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পান। তাদেরকেও নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে জিম্মি করা হয়েছিলো।

মি. শেম টভ প্রথমে একটি গাড়ীতে করে পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। কিন্তু পরে তার বন্ধুদের উদ্ধার করতে এসে হামাসের হাতে আটকা পড়েন। আর মি. কোহেন ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন তার বান্ধবীর সাথে। তারা এক জায়গায় আশ্রয় নিলেও সেখানে বোমা বর্ষণ হয়। তার বান্ধবী পালাতে পারলেও তিনি পারেননি। পরে তিনি মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে পরিবারকে জানান যে তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এরপর আর পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি।

মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ঘিরে তেল আবিবে ব্যাপক উল্লাস করতে দেখা গেছে। তাদের পরিবার এখনো আটকে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দাবি করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ১২শ মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো, যার বেশিরভাগই ছিলো বেসামরিক নাগরিক। ওই ঘটনার পর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এতে ৪৮ হাজার ৩১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।