ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, গাজায় আটক সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৮ জুলাই) গোষ্ঠীটির সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, গাজার আটক সব বন্দিদের মুক্তি দেয়ার জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। এই চুক্তি না হলে হামাস দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় বর্বরতার মধ্যেই কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় চলছে গাজায় যুদ্ধ বিষয়ে ১০ দিনের আলোচনা। ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি আর বন্দিমুক্তির প্রস্তাব থাকলেও বিতর্ক চলছে সেনা প্রত্যাহারের নকশা, ত্রাণ প্রবেশ ও যুদ্ধ শেষের নিশ্চয়তা নিয়ে।
এরমধ্যেই, হামাসের মুখপাত্র শুক্রবার টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে জানান, সব বন্দির মুক্তির বিনিময়েও যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি ইসরাইল। হামাসের দাবি, তারা বারবার গাজায় বন্দি সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার প্রস্তাব দিলেও ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ অবস্থায়, দুই পক্ষ সকল শর্ত মেনে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে কোনো ধরনের অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আবু উবাইদা বলেন,
আমরা বারবার সাম্প্রতিক চুক্তিতে সমস্ত বন্দিদের একবারে মুক্তি দেয়ার জন্য একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহু এবং তার ইহুদিবাদী মন্ত্রীরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমাদের বুঝিয়েছেন যে তারা এই বন্দিদের জন্য উদ্বিগ্ন নয় কারণ তারা ইসরাইলি সৈনিক। তাদের জীবন বাঁচানো বাধ্যতামূলক নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে একাধিক দফা বৈঠক চলছে। গত ১০ দিনের বেশি সময় ধরে এই আলোচনা চললেও এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি বলে জানায় হামাস।
আবু উবাইদা বলেন, ‘শত্রু যদি আবারও আগের মতো এই পর্বের আলোচনায় গড়িমসি করে এবং একে ভেস্তে দেয়, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে আর আংশিক চুক্তি বা ১০ জিম্মি মুক্তির প্রস্তাবে ফিরব না।’
হামাসের দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, চুক্তির বিষয়ে এখনও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে মতভেদ রয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে-ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের মানচিত্র, গাজায় ত্রাণ সরবরাহের প্রক্রিয়া এবং যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে নির্দিষ্ট নিশ্চয়তা।
এদিকে গাজার একমাত্র ক্যাথলিক চার্চে হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র ক্যারোলাইন লিভিট এ তথ্য জানান। এছাড়াও, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে ফোনালাপে এ হামলাকে 'ভুলবশত' বলে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু।