জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রথম সারির বিশেষজ্ঞরা মিয়ানমারের নৃশংস সামরিক শাসককে সমর্থন না করতে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলিকে আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, এই শাসক ক্ষমতায় নিজেদের লৌহমুষ্ঠি বজায় রাখতে "নিয়মমাফিক নিয়ন্ত্রণ-কৌশল, ভয় ও সন্ত্রাসের" উপর আস্থা রেখেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে মত-বিনিময়ের সময় বলেন, "পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।"
তিনি আরও বলেন,"কল্পনা করা অসম্ভব যে, মিয়ানমারের জনগণ আরও ভোগান্তি সহ্য করতে পারবে। তারপরেও এই দেশ গভীরতর সহিংসতা ও মর্মপীড়ার দিকে যাচ্ছে।"
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক হুন্তা সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিয়েছিল। তারপর থেকে, দেশের অর্থনীতি নিম্নমুখী, সুশীল সমাজের স্বর রুদ্ধ করা হয়েছে, রাজনৈতিক বিরোধীদের গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনা নৃশংসতার জবাবে বহু মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে।
তুর্ক বলেন,"গোটা গ্রামগুলি ধ্বংস করে পুড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়, খাদ্য, জল ও জীবনদায়ী ওষুধ থেকে বঞ্চিত করে বেসামরিক নাগরিকদের সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।"
তিনি বলেন,"অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে, সেনারা দেশজুড়ে অন্তত ৭০ হাজার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এগুলির মধ্যে ৭০ শতাংশই সাগাইং অঞ্চলে। ১.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। মানবিক সাহায্যের সামান্যও তারা পায়নি।"
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর বলেছে, সেনা ক্ষমতায় আসার পর তাদের হাতে ৩,৭৪৭ জনের প্রাণ গেছে এবং ২৩,৭৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের বিশ্বাস,"ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্ভবত আরও অনেক বেশি।" তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।