জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ডাকসু নির্বাচনের মতো জাকসুতেও ছাত্রশিবির সমর্থিত জোট ভূমিধস জয় পেয়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টায় সিনেট ভবনে ফল ঘোষণা শুরু করেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী- সহ-সভাপতি ছাড়া প্রায় অধিকাংশ পদেই জয়লাভ করেছে ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা।
সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুর রশিদ জিতু (স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেল)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৪টি। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হয়েছেন মো. মাজহারুল ইসলাম (শিবির প্যানেল)। তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৩০ ভোট। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদেও বিজয়ী হয়েছেন শিবিরের প্যানেল থেকে। এজিএস (পুরুষ) পদে ফেরদৌস আল হাসান ২ হাজার ৩৫৮ ভোট এবং এজিএস (নারী) পদে আয়েশা সিদ্দীকা মেঘলা ৩ হাজার ৪০২ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে আবু ওবায়দা ওসামা (শিবির প্যানেল), পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. শাফায়েত মীর (শিবির প্যানেল), সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিবুল্লাহ শেখ জিসান (স্বতন্ত্র), সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. রায়হান উদ্দীন (শিবির প্যানেল), নাট্য সম্পাদক মো. রুহুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), ক্রীড়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান কিরন (স্বতন্ত্র), সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (নারী) ফারহানা আক্তার লুবনা (শিবির প্যানেল), সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ) মো. মাহাদী হাসান (শিবির প্যানেল)
তথ্য প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম লিখন (শিবির প্যানেল), সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আহসাব লাবিব (গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-বাগছাস), সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (নারী) নিগার সুলতানা (শিবির প্যানেল), সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ) মো. তৌহিদ হাসান (শিবির প্যানেল), স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক হুসনী মোবারক (শিবির প্যানেল) এবং পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো. তানভীর রহমান (শিবির প্যানেল)।
কার্যকরী সদস্যের ৬টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন পুরুষ-১: মো. তরিকুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), পুরুষ-২: মো. আবু তালহা (শিবির প্যানেল) ও পুরুষ-৩: মোহাম্মদ আলী চিশতী (বাগছাস), নারী-১: নাবিলা বিনতে হারুণ (শিবির প্যানেল), নারী-২: ফাবলিহা জাহান (শিবির প্যানেল) ও নারী-৩: নুসরাত জাহান ইমা (শিবির প্যানেল)।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট গণনা শেষ হয় আজ শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে প্রায় আট হাজার।
জাকসু নির্বাচনের বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন পান। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১০ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেন (টিক চিহ্ন দিবেন)।
জাকসুর মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ ছাত্রী, বাকি ৭৫ শতাংশই ছাত্র। ভিপি পদে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মেয়ে দুইজন। আর চারটি পদে কোনো মেয়ে প্রার্থীই নেই।
সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্রী। আর মেয়েদের হলগুলোর পাঁচটিতে ১৫ পদে প্রার্থীই নেই।
নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নেয়। তবে ছাত্রদলসহ ৫টি প্যানেল নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছে।