ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতেই হবে। যদি তাদের অপরাধের বিচার করা না হয় তাহলে দেশের মানুষ আমাদের ক্ষমা করবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য ন্যাশনাল’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের মুখোমুখি করা হবে। আমরা ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের কাছে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার বিপুল পরিমাণ প্রমাণ আছে। যার মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টও অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘ এটিকে নথিভুক্ত করেছে এবং আমাদের কাছে শেখ হাসিনা, তার সরকার এবং ঘনিষ্ঠ সমর্থকদের অপরাধের প্রচুর প্রমাণ রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং আশা করছি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। এটি অবশ্যই করা হবে, অন্যথায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।
‘দ্য ন্যাশনাল’ পত্রিকার ওই সাক্ষাৎকারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুক্তি ও আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমিরাতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হলাম, তখন আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করি। আমি তাকে ব্যাখ্যা করি যে, তারা শুধু বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছিল।
তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্টের কাছে অনুরোধ করেছি যে, তিনি যেন তাদের ক্ষমা করে মুক্তি দেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষমা করায় আমি অত্যন্ত খুশি হই। এটি একটি অসাধারণ পদক্ষেপ ছিল এবং পুরো বাংলাদেশ সেটি উদযাপন করেছে। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই, কারণ সেখানে ১২ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতিকে সচল করা। আমরা রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনা করছি—কোন সংস্কার এখন বাস্তবায়ন করা হবে, কোনটি ভবিষ্যতে হবে এবং কোন সংস্কার প্রস্তাব তারা গ্রহণ করতে চান না। এটাই আমাদের সরকারের কাজের সীমা। এরপর আমরা ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করবো। জনগণ এটিকে উদযাপন করবে এবং আমাদের কাজ শেষ হবে। সময়।