বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কালজয়ী এক নক্ষত্রের নাম জহির রায়হান। প্রগতিশীল ও প্রতিবাদী সাহিত্য চর্চা করতে করেতই একসময় চলচ্চিত্রকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। যার ক্যামেরায় সেলুলয়েডে উঠে এসেছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম আর রক্তাত্ব ইতিহাস। জাতির এই সূর্যসন্তানের জন্মবার্ষিকী ১৯ আগস্ট।
১৯৩৫ সালের এই দিনে ফেনী জেলার সোনাগাজি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
চলচ্চিত্রকার, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক—তিন পরিচয়েই সফল আবু আবদার মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। জহির রায়হান নামেই পরে পরিচিতি পান। আজ ১৯ আগস্ট তার ৯১তম জন্মবার্ষিকী।
১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি বড় ভাই শহীদুল্লা কায়সারকে মিরপুরে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হন জহির রায়হান। এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি। মাত্র ৩৬ বছরের জীবন পেয়েছিলেন, তাতেই নিজেকে অনন্য করে রেখেছেন জহির রায়হান। অনবদ্য সৃজনালোয়ে তিনি উজ্জ্বল হয়ে বেঁছে থাকবেন বাঙালির স্মৃতি-সত্তায়।
জহির রায়হান ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি চলচ্চিত্রে নাম লেখান ১৯৫৭ সালে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’র সহকারী পরিচালক হিসেবে। পরিচালক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় ১৯৬১ সালে ‘কখনো আসেনি’ সিনেমা নির্মাণের মাধ্যমে।
১৯৬৮ সালে জহির রায়হান পরিচালনা করেন রঙিন চলচ্চিত্র ‘সঙ্গম’। ভাষা আন্দোলনের পটভূমিকায় তিনি নির্মাণ করেছিলেন কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’। চলচ্চিত্রটি দেখে সত্যজিত রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহা এবং ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।
কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নিগার পুরস্কারসহ অসংখ্য সন্মাননায় ভূষিত হয়েছেন জহির রায়হান।