News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

যে কারণে কারাগারে যেতে হয়েছিল মনি কিশোরকে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সেলিব্রিটি 2024-10-20, 7:47pm

rtwetwetew-444a8a6f0340c7c6b889b065a941aa4e1729432072.jpg




রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে ৯০-এর দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) নিজবাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, ৪ থেকে ৫ দিন আগে মনি কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

মনি কিশোর পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ৩০টির বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার; যার প্রায় সবগুলোই ছিলো হিট। রেডিও ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পীও ছিলেন তিনিটা

মনি কিশোরের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা ও লেখা। ২০টির মতো গান লিখেছেন ও সুর করেছেন মনি কিশোর।

এদিকে এক মার্কিন তরুণীকে গান শোনাতে কারাগারে যেতে হয়েছিল মনি কিশোরকে! আজ থেকে ৩২ বছর আগের ঘটনা। এক মার্কিন অষ্টাদশী এলিয়েদা মের্কড লিয়া শরীরে সাড়ে তিন কেজি হেরোইন বেঁধে ঢাকা বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক, যাকে মাদক পাচারের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হয়েছিল তার নতুন ঠিকানা। এই কারাগারে থাকতেই তরুণি বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হন। শুধু তাই নয়, এ দেশের সেই সময়ের জনপ্রিয় একটি বাংলা গান এলিয়েদার হৃদয় হরণ করে। ফলে সেই গান মুখস্ত করে ফেলেন মার্কিন এই তরুণী।

কারা সূত্র জানায়, সাড়ে চার বছর কারাগারে বন্দি থাকাকালে বাংলা ভাষা শিখেছেন এলিয়েদা। তিনি বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতেন, নাচতেন ও গাইতেন। সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন মার্কিন এই সুন্দরী তরুণী। এ ছাড়া ধর্মীয় আলোচনাও করতেন খুব। বিশেষ করে তার খ্রিস্টান ধর্মের কথাই তিনি প্রত্যেককে বলতেন।

ভাষা শিখে ফেলায়, সে সময়ের আলোচিত বাংলা গানের সুর এলিয়েদার হৃদয় স্পর্শ করে, এরপরে ঘটে যায় মজার ঘটনা। সেটা পরে বলছি। গানের নাম, ‘কী ছিলে আমায়, বলো না তুমি...।’ এই গান মুখস্থ করে কারাগারে নিজের মতো করে গাইতেন। এক সময় ইচ্ছা প্রকাশ করেন গানের গায়কের সঙ্গে দেখা করবেন। তখন গানের গায়ক মনি কিশোর তুমুল জনপ্রিয়। তার দেখা পাওয়া কি চারটি খানি কথা? তাও আবার জেলে বসে।

তবে সুদূর মার্কিন মুলুকের এই তরুণির ইচ্ছের কথা চাপা রইল না। চলে গেল, গানের গায়ক মনি কিশোরের কানে। কিন্তু জনপ্রিয়তা মনি কিশোরকে সে অর্থে ছুঁয়েছে কি না, সেটা ভিন্ন কথা। মনি কিশোর ইচ্ছে পোষণ করলেন তিনি জেলে যাবেন এবং সত্যিই তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গেলেন, এলিয়েদার স্বপ্ন পূরণ করলেন। মনি কিশোর গেলেন কারাগারে, দেখা করলেন এলিয়েদার সঙ্গে। শোনালেন সেই গান।

এইসব স্মৃতি এলিয়েদার হৃদয়ে গভীরভাবের দাগ কেটে গিয়েছিল। তিনি জেলে বসেই অনুশোচনায় ভুগেছিলেন। ফলে তাকে তার সাজা মওকুফ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে এসে জীবনের এক চরম অধ্যায় পার করে গেলেও এই দেশকে ভুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন এলিয়েদা।

যাওয়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে তিনি বলেছেন, এ দেশের মানুষকে আমি কখনো ভুলব না। বাংলাদেশ সরকার আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে নতুন জীবন দিয়েছে, আমি এর মর্যাদা দেব। পরিবর্তন হয়ে এই দেশে একদিনের জন্যে হলেও আসব।

হিথ্রো বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের জেলে থাকলেও আমাকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়া হয়।

মনি কিশোরের মতো মানুষদের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন বলেই তিনি বদলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে সত্যিই বদলে গিয়েছিলেন এই মার্কিন তরুণী। দেশে ফিরেই লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি এসোসিয়েট ডিগ্রি এবং ২০০১ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রি নেন। তিনি নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে চাকরি নেন। পরে এইএস করপোরেশনেও চাকরি করেন। ২০০৯ সালের ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে জনপ্রিয় ‘লকড আপ এব্রোড’-এর একটি পর্ব হয় এলিয়েদাকে নিয়ে। এলিয়েদা সেই চ্যানেলে সাক্ষাত্কারে বলেছেন সেসব ঘটনার আদ্যোপান্ত।আরটিভি