News update
  • UN Warns Gaza Fuel Crisis Threatens Humanitarian Collapse     |     
  • WHO’s Saima Wazed placed on indefinite leave amid graft probe     |     
  • UNRWA Commissioner-Gen. on Gaza: 800 starving people killed     |     
  • 150,000 Rohingya flee to BD amid renewed Myanmar violence     |     
  • Scrap trader hacked, stoned dead: 2 Jubo Dal men expelled      |     

সঞ্চয়পত্রে আগের সেই ভরসা কোথায়?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বানিজ্য 2025-07-12, 6:17pm

6c93d7bb4c14764fc0053f61c39eb450b2576e76d0d32e33-21771939ccae9ff09302c898a87953241752322643.jpg




সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মধ্যবিত্তের চিন্তার পারদ। মূল্যস্ফীতি সামাল না দিয়েই এই উদ্যোগে বাড়বে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা। তবে বাজারমুখী অর্থনীতির ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে সুদের হার আরও কমবে বলে ধারণা অর্থনীতিবিদদের। তাই আর্থসামাজিক নিরাপত্তার তাগিদেই অন্যান্য বিনিয়োগের সুযোগ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে এমন পরিকল্পনা প্রয়োজন ব্যাংক খাতে।

এক বিনিয়োগকারীর স্ত্রী জানান, তাদের দুজনেরই বয়স হয়েছে। এখন নিয়ম করেই যেন শরীর খারাপ হচ্ছে। মাসে অনেক টাকার মেডিসিন প্রয়োজন হয়। কিন্তু ভরসার জায়গা এ সঞ্চয়পত্র।

কারও দানে নয়, নিজের অর্থ বিনিয়োগ করে একটু স্বস্তি খোঁজা মানুষগুলো জানেন একটু বৈরি হাওয়াতেই মধ্যবিত্ত থেকে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ৩০ লাখ নতুন দরিদ্রের খাতায় চলে আসতে পারেন সঞ্চয়পত্রের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

এক সময় সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয়পত্রের ডেস্কে ৫-৭ কোটি টাকা নগদ বিক্রি হতো। এখন সেটি কমেছে, কারণ ডিজিটালাইজেশন হয়েছে, কাজের গতি বেড়েছে, সময় বেঁচেছে। কিন্তু যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের জীবনে কি গতি বেড়েছে? তাদের জীবন কিন্তু সে সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল।

পরিসংখ্যান বলছে, সবশেষ এপ্রিলে মার্চের তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রির হার কমেছে ৭ শতাংশ। সঞ্চয়পত্র তুলে নিয়েছেন ২৬ শতাংশ আর চলতি চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিলের যে নিট বিক্রি সেটিও ঋণাত্মক। প্রশ্ন আসতেই পারে সুদের হার কমিয়ে এই সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ কি ব্যাংকে ফেরানো সম্ভব?

কারণ আমরা জানি মজুরের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির একটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবধান চলে আসছে। এমন পর্যায়ে এই সুদের হার কমানো সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ ব্যাংকে ফেরানোর যে উদ্যোগ সেটি আসলে পারিবারিক এবং সামাজিক অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব রাখবে?

বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. এসএম জুলফিকার আলী বলেন, ‘সরকার হয়তো এই জিনিসটা করেছে ফিসক্যাল ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করার পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে। যারা অনেক বেশি অমাউন্ট ইভেন ৫০ লাখ পর্যন্ত করতে পারে তাদের কথা বলছি না; কিন্তু এক দুই তিন চার লাখ যারা করছে বা লো ইনকাম পেনশন হোল্ডার যারা সেখান থেকে একটা রিটার্ন নিয়ে সংসার পরিচালনা করছে তাদের ওপর নিশ্চিতভাবে এটার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাদের জীবনযাত্রার মান নেতিবাচক পড়বে। এবং এই ইন্টারেস্টের ওপর নির্ভর করে যাদের সংসার পরিচালনা হয় তাদের অবস্থাটা আরেকটু নাজুক হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের হিসাব হচ্ছে নতুন করে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে আসবে। এ পরিস্থিতিতে তাদের ইন্টারেস্টটা প্রটেক্ট করাটা আমার মনে হয় সরকারের একটা প্রায়োরিটি এজেন্ডা থাকা দরকার।’

পশ্চিমা বিশ্বে কর্মজীবনেই মানুষ শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সামাজিক নিরাপত্তায় বীমা প্রচলন বাধ্যতামূলক। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তার জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ জমা রাখার প্রবণতা রয়েছে মানুষের মধ্যে। যা ভবিষ্যতে আর্থিক সুরক্ষায় পাশে দাঁড়ায় শক্তি হয়ে। এছাড়া রাজস্ব দেয়ার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রগুলোর নানা সেবার প্রতিশ্রুতিও মানুষকে আগ্রহী করে সঞ্চয়ে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত শ্রীলঙ্কা পাকিস্তানের মতো দেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগের নানা উদ্যোগ ।

সঞ্চয়পত্রের স্কিম অনুযায়ী এখন থেকে মুনাফার হার সর্বোচ্চ হবে ১১.৮২ শতাংশ থেকে ১১.৯৮ শতাংশ। যা গত আগে ছিল ১২.২৫ শতাংশ থেকে ১২.৫৫ শতাংশ।

তবে আগের মতোই সাড়ে সাত লাখ টাকার বিভাজন রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে যাদের বিনিয়োগ এই সীমান নিচে তাদের জন্য বেশি মুনাফা ও যেসব সঞ্চয়পত্রের মূল্যমান সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি তাদের জন্য তুলনামূলক মুনাফার হার কমবে।

আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাজারমুখি অর্থনীতির ধারাবাহিকতায় সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার আরও কমতে পারে। ফলে বন্ড বাজার, পেনশন স্কিমের মতো ব্যাংকের সেবার সংখ্যা বাড়াতে হবে। অন্তর্ভুক্ত করতে হবে মানুষকে।

বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের রেট দেশে সর্বোচ্চ। এটা ব্যাংকগুলোর একটা অভিযোগ ছিল, যে আমরা সঞ্চয়পত্রের জন্য ফান্ড মবিলাইজ করতে পারি না। আমরা মুনাফা দেই ৯ শতাংশ আর সঞ্চয়পত্র দিচ্ছে ১১ শতাংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে যারা আছেন বা ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রিতে যারা আছেন, তারা আগের সরকারের চেয়ে বেশি মার্কেট ওরিয়েন্টেড। বাংলাদেশে ব্যাংকের নতুন গভর্নর আসার পর এক্সচেঞ্জে মার্কেটাইজ করেছে ইন্টারেস্ট মার্কেটাইজ করেছে। সুতরাং তার এনাদার স্টেপ এটা হওয়া উচিত যে ডেফিনেটলি যে সঞ্চয়পদ রেটও সে কমিয়ে দেবে।’

জীবনের প্রান্তিকে পুরোনো ভাঁজগুলো যাতটা পারা যায় একটু মানিয়ে তার সাথে চলা। তবু ভাঁজ থেকে যায়। বারান্দায় জল ছাপানো ভেজা কাপড় আরেকটু ভিজিয়ে দিতে অতিপ্রাকৃতিক হয়ে আসে বৃষ্টি। তাতে নয়নতারা নামক রাষ্ট্রের কোষাগারে কিছুটা দোলন লাগে বটে, তবে একটু হালকা বাতাসে চশমায় ছিটকে আসা জলের ফোটায় আগামী অস্বচ্ছ হয়ে আসে। যা পরোক্ষ ও দীর্ঘমেয়াদে ভার বাড়াবে রাষ্ট্রের জীবন মান উন্নয়ন সূচকে।