News update
  • Dhaka’s mosquito menace out of control; frustration mounts     |     
  • 10-day National Pitha Festival begins at Shilpakala Academy     |     
  • Dhaka concerned at dwindling funds for Rohingyas     |     
  • Rohingya crisis in uncertainty; WASH sector faces challenges     |     
  • HRW delegation meets Commission of Inquiry on Disappearances     |     

৭ জেলায় বন্যা: তিন লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট, দামের ঊর্ধ্বগতি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2024-10-14, 10:54am

img_20241014_105341-0d0f55b5c4c7072b498aa6543963465f1728881643.jpg




অক্টোবরের শুরুতে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন জেলা। এর আগে, আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি প্লাবিত হয়েছে ফেনী অঞ্চল। এতে নষ্ট হয়ে গেছে তিন লাখ হেক্টর জমির ফসল। এর প্রভাব পড়েছে পণমূল্যের ওপর।

এ বন্যায় দেশের ৭টি জেলার প্লাবিত এলাকায় ফসলি জমি তলিয়ে থাকে সাত থেকে ২০ দিন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় শীত ও শরৎকালীন সবজি, রোপা আমন ও আউশসহ বিভিন্ন ফসল। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে কেবল সিন্ডিকেটের কারসাজি নয়, বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে চাহিদা অনুযায়ী যোগান কমে যাওয়ায় শাক-সবজির দামেও ঊর্ধ্বগতি। 

আগস্টের শেষের দিকে গোমতী, মুহুরি, কহুয়া, সিলোনিয়া, ফেনী ও ছোটো ফেনীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্লাবিত হয় ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা। প্রায় সেপ্টেম্বরের অর্ধেকজুড়েই স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ছিল এ জেলাগুলো।

এসব অঞ্চলের কয়েক লাখ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আগাম শীতকালীন ও শরৎকালীন সবজি, রোপা আমন ও আউশসহ বিভিন্ন ফসল। এতে কষ্টের ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন কৃষকরা। অনেক টাকা খরচ করে ক্ষেতে আবাদ করার পর কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারেননি তারা। ফলে এ অঞ্চলে কৃষিখাতের ক্ষতি হয় কয়েক কোটি টাকার।

ফেনী অঞ্চলের কৃষকরা জানান, এ অঞ্চলের কৃষিখাত একবারে শেষ। তিনবার ধানের বীজ ফেলেও চারা তোলা যায়নি। পরপর বন্যায় এ অঞ্চলের কৃষকদের আর কিছু বাকি নেই। শুধু ধানই নয়, যেসব সবজি আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাজারে আসার কথা ছিল, সেসবও ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যা। ফলে চাহিদার তুলনায় পণ্যের যোগান একেবারেই কম।

তারা আরও জানান, কৃষি অফিসারকে তাদের অবস্থার কথা জানিয়ে খবর দেয়া হয়েছে। তার কাছে জানতে চেয়েছেন এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের এখন করণীয় কী! পরে তারা এসে ক্ষয়ক্ষতির ছবি তুলে নিয়েছেন। তারা বলেছেন ধানের বীজ দেয়া হবে ক্ষতিগ্রস্তদের। কিন্তু এরপর আর কোনো খোঁজ নেই। তারা ‘মিথ্যা’ আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে, অক্টোবরের শুরুতেই আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ে ময়মনসিংহ অঞ্চল। ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোনার ১০ উপজেলা সপ্তাহখানেক পানিতে ডুবে থাকায় নষ্ট হয় ৯৪ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও রবিশস্যসহ বিভিন্ন শাক-সবজি। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ২৩ কোটি টাকার মতো।

সাম্প্রতিক বন্যায় ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলি জমির ক্ষতি

গ্রাফিক্স চিত্রে ময়মনসিংহ অঞ্চলে বন্যায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষকরা জানান, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তাদের ধান ও সবজি -- সব তলিয়ে গেছে। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন, অন্যদিকে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম।

কৃষিবিদরা বলছেন, শুধু সিন্ডিকেট বা মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি নয়, বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার প্রভাবও পড়েছে বাজারে। চাহিদা অনুযায়ী যোগান কমে যাওয়ায় শাক-সবজির দাম ঊর্ধ্বগতি। তাই শুধু সিন্ডিকেট দমন করলেই নিয়ন্ত্রণে আসবে না বাজার। অপেক্ষা করতে হবে শীতকালীন সবজি ওঠা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাহিদ সাত্তার বলেন, ‘আমরা বছরের এ সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও বন্যা দেখেছি। এর প্রভাব পড়েছে আমাদের সবজির ওপর। এতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি ও দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘কৃষকরা যাতে ক্ষতি কাটিয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য তাদেরকে আগাম রবিশষ্য চাষের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’

কৃষকদের দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে প্রণোদনা, অধিক ফলনশীল ফসল আবাদে চাষিদের পরামর্শ এবং সহায়তা দিতে সরকার ও কৃষি বিভাগকে এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন কৃষিবিদরা। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক তদারকি ও সিন্ডিকেটকে কঠোরভাবে দমন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। সময় সংবাদ।