ইভটিজিংয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নারীরা। ছড়িয়ে পড়েছে ভার্চুয়াল জগতেও। জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দুইজনই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে যৌন হয়রানির শিকার।
যানবাহন, রাস্তা, বাজার, কিংবা কর্মক্ষেত্রে প্রতিদিনই যৌন হয়রানির ভয়ংকর অপরাধের শিকার নারীরা। কেউ প্রতিবাদ করেন, কেউবা সামজিক মর্যাদার ভয়ে চুপ থেকে সহ্য করেন অপমান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১০ বছরে নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সহিংসতার শিকার নারীদের মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ আইনের আশ্রয় নেন। বাকি ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না। আর ৬৪ শতাংশ ভুক্তভোগীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধের কথা কাউকে বলতেও পারেন না।
প্রতিকার না পাওয়ায় মানসিক আঘাত যেমন রয়েছে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে সৃষ্টি হচ্ছে উদ্বেগ-বিষণ্নতাসহ নানা ধরনের মনস্তাত্ত্বিক রোগ।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. শারমীন করিম বলেন, নারীরা টিজিংয়ের শিকার হলে সহজেই এটা কারও সঙ্গে শেয়ার করা হয় না। এটা ওই ভুক্তভোগীর মনের মধ্যে চলতে থাকে। পরবর্তীকালে রাস্তায় বের হলে কীভাবে চলবে, সেই বিষয়টা তার মাথায় কাজ করে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. তাইয়েব ইবনে জাহাঙ্গীর বলেন, ইভটিজিংয়ের মাধ্যমে ওই ভুক্তভোগী এতটাই মানসিক আঘাত পায় যে সে ট্রমায় চলে যায়। এই বিষয়গুলো তার সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে সে একটা সময় ডিপ্রেশনে ভুগতে পারে।
ধরন বদলে এখন সামাজিক মাধ্যমেও ইভটিজিংয়ের প্রবণতা প্রবল। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দুইজনই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। আইনে শাস্তি বাড়ানো হলেও প্রয়োগের অভাবে পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না এই সামজিক অনাচার।