অভিবাসন প্রত্যাশীদের আগমনকে সুসমন্বিত ভাবে দেখ-ভাল করার লক্ষ্যে ইইউ-এর নেওয়া পরিকল্পনাকে শুক্রবার স্বাগত জানিয়েছেন ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। শরণার্থী উদ্ধারকারী একটি নৌকা নিয়ে ইতালি ও ফ্রান্সের মধ্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হওয়ার পর ইইউ ঐ পরিকল্পনা নিয়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে একটি বেসরকারী সংস্থা পরিচালিত একটি জাহাজ ফিরিয়ে দেয় ইতালি। এরপর ফ্রান্স এর জন্য ইতালি সমুদ্র আইনের প্রতি সম্মান দেখায়নি বলে ইতালিকে অভিযুক্ত করেছে। এরপর সৃষ্টি হয় সংকট। রাজনৈতিকভাবে জটিল এই বিরোধ মীমাংসা করতে, ইইউ ব্রাসেলসে আলোচনা শুরু করেছে।
সব পক্ষই এই বৈঠককে ফলপ্রসূ বলে উল্লেখ করছে। তবে, ইইউ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকারী দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিট রাকুসান বলেন, “সব অংশগ্রহণকারীই একমত হয়েছেন যে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আরও বেশি কিছু করা যেতে পারে এবং অবশ্যই করা উচিত।"
তিনি বলেন, মন্ত্রীরা এই জটিল আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ ডিসেম্বরের আবারও বৈঠকে বসবেন।
ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারিটিস শিনাস জানান, ইউরোপ আর কোনো অস্থায়ী সমাধানে যেতে পারবে না। মার্গারিটিস শিনাস ইউরোপীয় জীবনধারাকে আরও উন্নত করার দায়িত্বে নিয়োজিত কমিশনার।
আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা এখনও ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের তুলনায় অনেক কম। তবে, সাম্প্রতিক এই বিবাদ, ২৭ জাতির মধ্যে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ন্যায়সংগত ভাবে ভাগ করে দেওয়ার চুক্তিকে অবমাননা করেছে।
এই মাসের শুরুর দিকে, ইতালির উগ্র-ডানপন্থী নেতা জিওর্জিয়া মেলোনির নতুন সরকার ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা ২৩৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে বহনকারী নরওয়ের পতাকাবাহী একটি জাহাজ নোঙর করার অনুমতি দেয়নি।
ব্রাসেলস, অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি নতুন নীতিতে সম্মত হতে এবং এর বাস্তবায়নের জন্য বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করছে। এই সাম্প্রতিক বিতর্ক বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে।
বিতর্ক জন্ম দেওয়া জাহাজ ওশান ভাইকিং অবশেষে ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে, রোমের কার্যকলাপের প্রতি রুষ্ট হয়ে কর্তৃপক্ষ ইতালিতে আটকে পড়া ৩,৫০০ আশ্রয়প্রার্থীকে গ্রহণের জন্য পূর্বের একটি চুক্তি স্থগিত করে।
এই ঘটনা, ইইউ-এর অন্তর্বর্তী সমাধানকে উপেক্ষা করে, ২৭ রাষ্ট্রের এই জোটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের শুক্রবারের এই বিশেষ বৈঠক আহবান করতে ফ্রান্সকে উৎসাহিত করে।
ইতালি এবং গ্রীসের মতো উত্তর আফ্রিকার উপকূলবর্তী ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোও অভিবাসন প্রত্যাসীদের জন্য খুব বেশি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিল। এর পর ঐ অস্থায়ী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হয়েছিল।
একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, "ঐ পরিকল্পনায় নতুন কিছু নেই, তাই এটি অভিবাসন সমস্যার সমাধান করবে না।”
এই পরিকল্পনায়, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও মিশরের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে ব্রাসেলস। যাতে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের চোরাচালানকারীদের জাহাজে করে যাওয়া বন্ধ করা যায়। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।