Kuakata Kuakata beaches received post-Eid vacationers. Photo. UNB
পটুয়াখালী: কুয়াকাটা ক্লাব’র সভাপতির বিরুদ্ধে কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের অনিয়ম ও দূর্নীতর অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যরা। শনিবার দুপুরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন “কুয়াকাটা ক্লাবের” প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লুৎফুল হাসান রানা। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জহিরুল ইসলাম মিরন, নেছার উদ্দিন হাওলাদার ও সদস্য সাইদুর রহমান সবুজ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে লুৎফুল হাসান রানা বলেন, ’আমরা ১৩ জন উদ্যমী তরুন-যুবক ২০১৯ইং সালে ‘কুয়াকাটা ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করি। যা ওই বছরের ১ অক্টোবর ২০১৯ইং জয়েন্ট স্টক কোম্পানী থেকে ‘কুয়াকাটা ক্লাব
লিমিটেড’ এর নিবন্ধনও পাই। প্রতিষ্ঠা লগ্নে সদস্য প্রতি ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা করে দিয়ে নিজস্ব ভবনের জন্য ৪ একর ৬০ শতাংশ জমি বায়না করি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্লাবটি সাংগঠনিক নিয়মে পরিচালিত হয়ে আসলেও ক্লাবটির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন মুসুল্লী, অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান সহ কতিপয় সদস্য নিজেদের খেয়াল খুশি মত ক্লাবটি পরিচালিত করছে। সামাজিক সংগঠন হিসেবে কুয়াকাটা ক্লাব ব্যাপক পরিচিত পাওয়ায় গত ৩ বছরে শতাধিক সদস্য অর্ন্তভূক্ত হয়। সদস্য প্রতি ১ লাখ টাকা করে নেয়া হয়। ক্লাবের নির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান
সোহেল ওইসব সদস্যদের অদ্য পর্যন্ত সদস্য হিসেবে ‘রিকগনিশন’ বা আর্থিক সহায়তা গ্রহনের ‘রিসিট’ দেয়নি। রিসিট দেয়ার জন্য বার বার তাগাদা দিলে দেই দিব বলে কালক্ষেপন করে আসছেন তিনি। এনিয়ে ক্লাব প্রেসিডেন্ট ও সাধারণ
সম্পাদকসহ প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের সাথে বিরোধ দেখা দিলে গত ৫ মার্চ ২০২২ তারিখে সাধারণ সম্পাদক রুমান ইমতিয়াজ তুষার কার্যনির্বাহী কমিটির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেন, ওয়াহিদুজ্জামান সোহেলসহ তাঁরা তিনজন কতিপয় সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে একটি রেজুলেশন তৈরি করে ক্লাবের নামে পরিচালিত অগ্রনী ব্যাংক কুয়াকাটা শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংক কুয়াকাটা
শাখা এবং বেসিক ব্যাংক মহিপুর শাখা থেকে সব টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কুয়াকাটা ক্লাব এখন ঢাকায় বসে পরিচালিত হচ্ছে। কুয়াকাটায় অফিস থাকলেও তা বন্ধ করে দেয়া হয়। আমরা শুনেছি, সেখানে বসে তাঁরা কুয়াকাটা ক্লাবের নাম ভাঙ্গিয়ে নানান অপকর্ম করছেন এমন দাবী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কুয়াকাটা ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে লুটপাট করে খাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিনত করেছেন। বার্ষিক এজিএম সভায় ক্লাবের আয় ব্যয়ের হিসাব নিকাশ উপাস্থাপন না করে ক্লাবের ফান্ডে থাকা প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এ নিয়ে আমরা সদস্যদের একাংশ প্রতিবাদ করলে আমাদের না জানিয়েই নতুন কার্র্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে
প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের না রেখে নিজেদের ইচ্ছে মাফিক ক্লাবটি পরিচালিত করছে, যা জয়েন স্টক কোপম্পানী আইনের বর্হিভূত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নেছার উদ্দিন হাওলাদার দাবী করেন, ক্লাবের জমি ক্রয় বিক্রয়ে অস¦চ্ছতার আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন মুসুল্লীর শশুর আঃ মান্নান হাওলাদারের কাছ থেকে ক্লাবের জমি ক্রয় করা হয়েছে। ওই জমি মরহুম আঃ করিম হাওলাদার গংদের পক্ষে নিন্ম ও উচ্চ আদালত রায় ডিগ্রি দিয়েছে। এমতাবস্থায় ক্লাবের নির্মাণাধীন ভবন ও সম্পত্তির অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাইদুর রহমান সবুজ বলেন, ’আমার কাছ থেকে সংগঠনটির অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান নগদ ১ লাখ টাকা নিলেও জমা রিসিট কিংবা সদস্য কার্ড দেয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবী করেন, কুয়াকাটা ক্লাব একটি সামাজিক সংগঠন। এই সংগঠনের অনেক সদস্য রয়েছে যারা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ পদে রয়েছে। এসব সদস্যদের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হলেও জমা রিসিট দেয়া হয়নি বলে দাবী করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সদস্যরা কুয়াকাটা ক্লাবের সভাপতিসহ কতিপয় অর্থলোভী সদস্যদের আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতর বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান।
এ বিষয়ে কথা বলতে কুয়াকাটা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান সোহেলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেস্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। - গোফরান পলাশ